নিজস্ব প্রতিবেদক
ঘণ্টা মেপে বা ধরাবাঁধা কোনো নিয়মের মধ্যে পড়াশোনা করেননি। তবে পরিকল্পনা করে পড়াশোনা করতেন। রেজাল্ট ভালো হবে সেটা জানতেন। কিন্তু প্রথম হবেন সেটি চিন্তা করেননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী খুলনার প্রিয়ন্তী মণ্ডল।
এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএসহ ভর্তি পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত মোট নম্বর ১০৫ দশমিক ২৫। তিনি খুলনার এম এম সিটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। স্কুল জীবন শেষ করেছেন ডুমুরিয়ার আড়পাড়া সরকারি আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছেন। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছেন।
এ বছর কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে পাসের হার ১০.০৭ শতাংশ। আর ফেল করেছেন ৮৯.৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশাসনিক ভবনের অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন।
এ বছর কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা দুই হাজার ৯৩৪টি। এর মধ্যে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য এক হাজার ৭০৭টি, বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৯৪৪টি ও ব্যবসা শিক্ষার জন্য ২৮৩টি আসন রয়েছে। এ আসনের বিপরীতে আবেদন পড়ে মোট এক লাখ ১২ হাজার ২২৫ জন। আর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এক লাখ দুই হাজার জন শিক্ষার্থী। ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেছেন ১০ হাজার ২৭৫ জন, যা মোট পরীক্ষার্থীর মাত্র ১০.০৭ শতাংশ।
ভালো ফলাফলের পেছনে কার অবদান এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়ন্তী বলেন, আমার সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন মা-বাবা ও ভাই। এছাড়া আমার শিক্ষকদেরও অবদান রয়েছে। প্রতিদিন পড়া শেষ করে আগে মায়ের কাছে পড়া দিয়ে কোচিং যেতাম। মা ছোটবেলা থেকেই পাশে বসে পড়া ধরতেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়কালটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। জীবনের মোড় পাল্টে দেয়।
আইন বিষয়ে পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে বিচারক হতে চান বলে জানান অদম্য মেধাবী প্রিয়ন্তী।
প্রিয়ন্তীর গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরখালীতে হলেও লেখাপড়ার জন্য পরিবারসহ থাকতেন নগরীর নিরালা আবাসিক এলাকায়। বাবা পঙ্কজ কুমার মণ্ডল চাকরি সূত্রে মাগুরায় থাকলেও গৃহিণী মা সন্তানদের লেখাপড়ায় ছিলেন আপসহীন। সন্তানের এমন দেশসেরা সাফল্যে বেজায় খুশি বাবা-মা।
বাবা পঙ্কজ কুমার মণ্ডল বলেন, মেয়ে প্রথম হবে ভাবতে পারিনি। এমন সাফল্যে ভীষণ ভালো লাগছে। ও অনেক কষ্ট করেছে। ওর মা সব সময় পাশে বসে পড়িয়েছেন।
প্রিয়ন্তী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য একটি কোচিং সেন্টারের খুলনা শাখায় পড়াশোনা করেছেন বলে জানান তার বাবা।
এদিকে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার পর বিভিন্ন কোচিং সেন্টার থেকে প্রিয়ন্তীকে ছাত্রী হিসেবে দাবি করে প্রচারণা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :