নারী ছাড়া পুরুষের জীবন যেমন অর্থহীন, পুরুষ ছাড়া নারীর জীবনও অপরিপূর্ণ। এক কথায় নারী-পুরুষ একে অন্যের পরিপূরক। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা তোমাদের আবরণস্বরূপ আর তোমরা তাদের আবরণ।’ (সুরা বাকারা: ১৮৭)
স্বামী পূণ্যবান হলেও গুনাহগার স্ত্রীর কারণে সংসার সুন্দর ও পবিত্র হয় না। কিন্তু স্ত্রীও যদি নেককার হন, তাহলে দাম্পত্য জীবন পরিণত হয় স্বর্গরাজ্যে। আর সেই স্বামী-স্ত্রীকে বলা হবে ‘জান্নাতে প্রবেশ করো তোমরা এবং তোমাদের স্ত্রীরা সানন্দে।’(সুরা জুখরুফ: ৭০)
তাই তো রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, পার্থিব জগতটাই হল ক্ষণিক উপভোগের বস্তু। আর পার্থিব জগতের সর্বোত্তম সম্পদ সতী সাধ্বী নারী। (সহিহ মুসলিম: ১৪৬৭; মুসনাদে আহমদ: ৬৫৬৭; সহিহ ইবনে হিববান: ৪০৩১)
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পুরুষ নারীদের অভিভাবক, কারণ আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এ কারণে যে, পুরুষগণ নিজেদের অর্থসম্পদ ব্যয় করে। সুতরাং সাধ্বী স্ত্রীগণ অনুগত হয়ে থাকে। পুরুষের অনুপস্থিতিতে আল্লাহর হেফাজতে (তার অধিকারসমূহ) হেফাজত করে।’ (সুরা নিসা: ৩৪)
স্বামীর আনুগত্য ও নিজের চরিত্রের হেফাজতকারী হয়ে থাকেন নেককার নারী। ওসব নারীদের জন্য জান্নাতের ওয়াদা রয়েছে। ‘যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজান মাসের রোজা রাখে, নিজের লজ্জাস্থান হেফাজত করে এবং স্বীয় স্বামীর আনুগত্য করে, সে নিজের ইচ্ছানুযায়ী জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবে।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৪১৬৩; মুসনাদে আহমদ: ১৫৭৩)
স্ত্রী নেককার—যেভাবে বুঝবেন
নেককার স্ত্রী চেনার উপায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে হাদিসে। ইরশাদ হয়েছে—‘উত্তম স্ত্রী সে-ই, যার দিকে তাকালে তুমি আনন্দিত হও, আদেশ করলে আনুগত্য করে, তুমি দূরে থাকলে তার নিজের ব্যাপারে ও তোমার সম্পদের ব্যাপারে তোমার অধিকার রক্ষা করে। তারপর তিনি কোরআনের উক্ত আয়াত (পুরুষ নারীদের অভিভাবক) তেলাওয়াত করেন। (তাফসিরে তাবারি: ৯৩২৯; মুসনাদে ত্বয়ালিসি: ২৩২৫)
আবু হুরায়রা রা. বলেন, নবী কারিম (স.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, নারীদের মধ্যে কোন নারী উত্তম। তিনি বললেন, স্বামী যাকে দেখলে আনন্দবোধ করে, যাকে আদেশ করলে আনুগত্য করে, স্ত্রীর বিষয়ে এবং সম্পদের ব্যাপারে স্বামী যা অপছন্দ করে তা থেকে বিরত থাকে। (মুসনাদে আহমদ: ৭৪২১; সুনানে নাসায়ি, কুবরা: ৮৯৬১)
তাই তো পাত্রী নির্বাচনের সময় দীনদারীকে প্রাধান্য দিতে উৎসাহিত করেছেন নবীজি (স.)। ইরশাদ করেছেন, ‘..তুমি দীনদার ও চরিত্রবানকেই গ্রহণ করো।’(মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ১৭৪৩৪; মুসনাদে আহমদ: ১১৭৬৫; সহিহ ইবনে হিববান: ৪০৩৪)
নেককার স্ত্রীর আরও কিছু বিশেষ গুণ
কোরআন-হাদিস অনুযায়ী, নেককার নারীরা বিশেষ কিছু গুণের অধিকারী হয়ে থাকেন। যেমন—
দীনদারী
বিশ্বস্ত ও অনুগত
সম্পদের হেফাজতকারী
নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী
সরলমনা
ঘরে অবস্থানকারী
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সকল নারীকে নেককার ও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে কবুল করুন। পুণ্যবতী স্ত্রীর মর্যাদা দান করুন। আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :