‘গুমের’ শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনি

গুমের শিকার সন্তান ও ভাইকে ফেরত চাইলেন স্বজনরা


খুলনা লাইভ প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৫, ২০২২, ৭:১২ অপরাহ্ন /
গুমের শিকার সন্তান ও ভাইকে ফেরত চাইলেন স্বজনরা

‘গুমের’ শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনি এবং যশোরের বেনাপোলের মেধাবী কলেজ ছাত্র মো. রেজোয়ান হোসেনকে ফেরত দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। তারা বলেছেন, যার সন্তান গুম হয়, শুধু তারাই বোঝেন সন্তান হারানোর কীবেদনা। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীও নারী হওয়ায় তিনি নারীদের ব্যথা অনুভব করে অবিলম্বে তাদের গুম হওয়া সন্তান-স্বজনদের ফিরিয়ে দিবেন বলেও প্রত্যাশা করেন তারা।
‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনায় আয়োজিত মানববন্ধন ও র‌্যালিতে অংশ নিয়ে সরকারের প্রতি তারা এ দাবি জানান। নগরীর জাতিসংঘ পার্কের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ ও মানবাধিকার কর্মীদের সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক’ যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করে। মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক মুহাম্মদ নূরুজ্জামান দিবসের বিবৃতি পাঠ এবং সভাপতিত্ব করেন।
মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে গুমের শিকার যশোরের বেনাপোলের মেধাবী কলেজ ছাত্র মো. রেজোয়ান হোসেনের বৃদ্ধা মা সেলিনা বেগম বলেন, ‘তার ছোট ছেলে মো. রেজোয়ান হোসেনকে ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট বেনাপোল থানা পুলিশ আটক করে। পরবর্তীতে ওসি অপূর্ব হাসানের নেতৃত্বে তাকে গুম করা হয়। এ ঘটনায় তারা ভয়ে মামলা করার সাহস পাননি। দীর্ঘ ৬ বছরেও তার সন্তানের সন্ধান না পেয়ে তারা (মা-বাবা) অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। সব সময় দুশ্চিন্তা ও ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। কেন তার ছেলেকে গুম করা হলো-এ প্রশ্ন রেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে অবিলম্বে তাকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।
গুমের শিকার সাতক্ষীরার হোমিও চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জনি’র বাবা মো. আব্দুর রাশেদ এবং বোন রাহিমা সুলতানা নিশি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘২০১৬ সালের ৪ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর থানার এস আই হিমেলের নেতৃত্বে পুলিশ জনিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু থানায় কয়েকদিন রেখে তাকে গুম করা হয়। গত প্রায় ৭ বছরেও তার সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ। ছেলে ও ভাইকে হারিয়ে তাদের সংসার তছনছ হয়ে গেছে। তার মাও অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। তারা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের কঠোর শাস্তি এবং ডা. জনিকে ফিরিয়ে দিতে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন নারী নেত্রী রেহানা ঈসা, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা শাখার আহবায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, নিরাপদ সড়ক চাই-নিসচা’র জেলা সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব, মানবাধিকার কর্মী শেখ আব্দুল হালিম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছায়াবৃক্ষের প্রধান নির্বাহী মাহবুব আলম বাদশা, নারী নেত্রী ইসমত আরা কাকন। স্বাগত জানান হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার ও সাংবাদিক কে এম জিয়াউস সাদাত।
উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আলমগীর আশরাফ, কেসিসি’র সংরক্ষিত আসনের সাবেক কাউন্সিলর মোসাঃ আনজিরা খাতুন ও আফরোজা জামান, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট মো. শহীদুল ইসলাম, সাংবাদিক এম এ আজিম, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের গৌতম দে হারু, মো. শওকত হোসেন, মো. তামিম হাসান, মোঃ শহীদুল ইসলাম, সাংবাদিক হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ।